লেবুর খোসার উপকারিতা ও অপকারিতা

লেবুতে রয়েছে নানান ধরনের পুষ্টি উপাদান যার কারণে লেবু ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় ব্যবহার করা হয়। লেবু যেমন আমাদের শরীরের জন্য খুবই কার্যকরী উপাদান তেমনি লেবুর খোসা ও আমাদের শরীরের জন্য উপকারী।লেবুর খোসার উপকারিতা ও অপকারিতালেবুর খোসার রয়েছে অসংখ্য সব উপকারিতা। আজকের পোষ্টটি পড়ার মাধ্যমে জানতে পারবেন লেবুর খোসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। তাহলে চলুন দেরী না করে জেনে নেওয়া যাকঃ

লেবুর খোসার উপকারিতা?

অনেকে লেবুর রস সংগ্রহ করা হয়ে গেলে লেবুর খোসা ফেলে দিয়ে থাকেন। কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকেই জানেননা লেবুর খোসার উপকারিতা সম্পর্কে বা লেবুর খোসা আমাদের শরীরের জন্য কি কি উপকার বয়ে আনতে পারে।

লেবুর খোসার ব্যবহারে আমাদের শরীরে নানা রোগ দূর হতে পারে। নিচে লেবুর খোসা ব্যবহারে আমাদের শরীরে কি কি উপকার হতে পারে সেই সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

১. লেবুর খোসায় রয়েছে ভিটামিন সি এবং সাইট্রিক এসিড যা সাধারণত মাড়ি থেকে রক্ত পড়া এবং দাঁতের আরো অনেক সমস্যার সমাধান করে থাকে।

২. লেবুর খোসায় রয়েছে সাইট্রাস বায়োফ্লাভোনোয়েড নামক এক ধরনের উপাদান যা সাধারণত আমাদের স্ট্রেস দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

৩. নিয়মিত লেবুর খোসা খেলে শরীরের সাইট্রিক এসিডের মাত্রা অনেক বেড়ে যায় যার ফলে কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৪. লেবুর খোসা খেলে শরীরে ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ ধ্বংস হয়ে যায় এবং শরীরে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।

৫. লেবুর খোসা খেলে সারা শরীরের রক্ত প্রবাহের উন্নতি ঘটা শুরু করে। অর্থাৎ শরীরের প্রতিটি স্থানে রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন পৌঁছে যায় যার ফলে আমাদের শরীর অনেক চাঙ্গা হয়ে যায়।

৬. লেবুর খোসায় রয়েছে পেকটিন নামক এক ধরনের উপাদান যা নিয়মিত খেলে আমাদের শরীরের ওজন কমতে থাকে। কেননা লেবুতে উপস্থিত থাকা এই উপাদানটি চর্বি ঝরিয়ে ওজন কমিয়ে থাকে।

৭. লেবুর খোসায় রয়েছে পলিফেনল নামের একটি উপাদান যা আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে থাকে।

লেবুতে থাকা পটাশিয়াম ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রেখে থাকে। যার কারণে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।

৮. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়ে থাকে নিয়মিত লেবুর খোসা সেবন করার মাধ্যমে। কেননা লেবুর খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করে তুলতে সক্ষম এবং ত্বক থেকে বলিরেখা দূর করতে দারুণ কার্যকরী।

৯. খোসায় রয়েছে ফাইবারের মত উপাদান যা আমাদের হজম শক্তির উন্নতির জন্য দারুন ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত লেবুর খোসা প্যাক করে খেতে পারেন এতে করে উপকার পাবেন।

১০. লেবুর খোসা খাওয়ার ফলে আমাদের হার অনেক শক্ত পোক্ত হয়ে ওঠে। কেননা লেবুর খোসায় রয়েছে ক্যালসিয়াম এর মত উপাদান যা সাধারণত হার শক্তিশালী করতে সাহায্য করে থাকে।

লেবুর খোসা খাওয়ার নিয়ম?

লেবুর খোসা আমাদের শরীরের কি কি উপকারে আসে বা লেবুর খোসা খেলে কি কি উপকার সাধন হয় সে সম্পর্কে এতক্ষণে জেনে গিয়েছেন। এবার জানতে হবে লেবুর খোসা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।

লেবু থেকে ছাড়ানো খোসা আপনি প্রথমে শুকিয়ে গুঁড়া করে নিতে পারেন। তারপরে লেবুর খোসা যখন গুড়া করা হয়ে যাবে তখন এগুলো আপনারা বিভিন্ন উপাদানের সাথে খেতে পারবেন। লেবুর খোসা অর্গানিক চা, পানীয় এবং প্রতিদিনকার খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।

লেবুর খোসার ফেসপ্যাক | লেবুর খোসা দিয়ে রূপচর্চা

লেবুর খোসা কে ত্বকের যত্নেও লাগানো যেতে পারে। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে এবং ত্বক উজ্জ্বল করে তুলতে লেবুর খোসা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।

বিশেষ করে মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার জন্য লেবুর খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রথমে একটি পাত্রে ২ টেবিল চামচ চালের গুঁড়া নিন এবং তার সাথে এক চিমটি লেবুর গুঁড়া মিশিয়ে নিন।

এবার এই মিশ্রণটির সাথে ঠান্ডা দুধ মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করে ফেলুন। এই মিশ্রণটি আপনার মুখে সুন্দরভাবে লাগিয়ে দিন এবং এটি ১৫ মিনিট রেখে দিন।

তারপরে পরিষ্কার এবং ঠান্ডা পানি দিয়ে আপনার মুখ সুন্দর ভাবে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন আপনার মুখ আগের তুলনায় অনেকটা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।

শেষ কথা, আশা করি আজকের পোস্টটি যারা পড়েছেন তারা লেবুর খোসার উপকারিতা বা লেবুর খোসা ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। তাই ত্বকের যত্নে লেবুর খোসা ব্যবহার করুন এবং ত্বককে সুন্দর করে তুলুন।

Sharing Is Caring:

This website mainly provides information on exercise, fitness, wellness, healthy living, etc. in the Bengali language.

Leave a Comment