কোন নারী অন্তঃসত্তা হয়েছে কিনা সেটা জানার জন্য প্রেগনেন্সি টেস্ট করা জরুরী। বর্তমানে কোন নারীর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার জন্য সব থেকে বিশ্বস্ত যে উপায়টা অর্থাৎ যার মাধ্যমে নির্ভুলভাবে জানা যায় তার নাম হচ্ছে প্রেগনেন্সি কিট।এই যন্ত্রটি সহজভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে প্রেগনেন্সি টেস্ট করা যায়। তাছাড়া প্রেগনেন্সি টেস্ট করার নিয়ম আরো অনেক রয়েছে যার মাধ্যমে ঘরে বসেই বলে দেওয়া যেতে পারে অন্তঃসত্ত্বা কিনা। তাহলে চলুন দেরি না করে উপায় গুলো জেনে নেওয়া যাকঃ
প্রেগনেন্সি টেস্ট করার নিয়ম?
প্রেগনেন্সি টেস্ট করার বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই জানা যায় রোগী প্রেগনেন্ট কিনা। নিচে এই সকল উপায় গুলো নিয়েই আলোচনা করা হলোঃ
টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার নিয়ম?
অনেকে টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার কথা বলে থাকেন। কিন্তু অনেকের এই বিষয়ে ধারণা নেই কিভাবে টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করা হয়ে থাকে। টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার জন্য একটি প্লাস্টিকের বাটিতে প্রস্রাবের সাথে এক চামচ টুথপেস্ট মেশাতে হবে।
এবার যদি আপনি দেখেন বাটিতে টুথপেস্ট দেওয়ার ফলে প্রস্রাবের রং নীল হয়ে গিয়েছে তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনি অন্তসত্ত্বা। যারা টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে চান তারা উক্ত উপায়ে খুব সহজে বাড়ি বসেই করতে পারবেন।
কাঠি দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার নিয়ম?
ডিজিটাল স্ক্রিপ্ট কাঠি দিয়ে কিভাবে প্রেগনেন্সি টেস্ট করা যায় এই নিয়ম সম্পর্কে এবার জানবো। মাসিকের নির্দিষ্ট সময় থেকে মাসিক বন্ধের ১৮/২০ দিন পর সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কাপ প্রস্রাব সংগ্রহ করতে হবে।
এবার ডিজিটাল স্ক্রিপ্ট কাঠিতে ৪-৫ ফোটা ইউরিন নিতে হবে। এবার সঠিক ফলাফল পেতে ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তারপরে C কন্ট্রোলে যদি লাল রং আসে তাহলে বুঝে নিতে হবে যে আপনি গর্ভবতী নন।
ঘরে বসেই প্রেগনেন্সি টেস্ট করার নিয়ম?
আর যদি C ও T দুইটি কন্ট্রোলে লাল রং আসে তাহলে বুঝে নিতে হবে যে গর্ভবতী। আর যদি T কন্ট্রোলে লাল দাগ আসে তাহলে বুঝে নিতে হবে যে কাঠিটির সংক্রিয় নয়। এইভাবে খুব সহজেই কাঠি দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করা যায়।
লবন দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার নিয়ম?
লবণ দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট কিভাবে করা যায় এই বিষয়ে জানা আছে কি?আগে নুন দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করা হতো। প্রথমে একটি পরিষ্কার কাচের গ্লাস নিতে হবে। এবার ড্রপারের সাহায্যে সকালের প্রস্রাবের কয়েক ফোটা গ্লাসের মধ্যে ফেলতে হবে।
এবার তার ওপর সামান্য লবন ফেলে দিতে হবে।যদি কোন ভাবে দেখেন যে এই দুইটি উপাদানের মধ্যে বিক্রিয়া হচ্ছে অর্থাৎ বুদবুদ তৈরি হচ্ছে তাহলে বুঝে নিতে হবে যে আপনি প্রেগন্যান্ট।
সাবান দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার উপায়?
সাবান দিয়ে খুব সহজেই প্রেগনেন্সি টেস্ট করা যায়। সকালে প্রথম ইউরিন এর সাথে সাবান পানি মিশিয়ে নিতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত ইউরিন এবং সাবান পানি একসাথে না মিশে ততক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
যদি দেখেন দুটি একসাথে মিশে গিয়েছে এবং বুদবুদ ওঠা শুরু হয়ে গিয়েছে তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনার গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চিনি দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার নিয়ম?
চিনি দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করা অনেক সহজ। প্রথমে একটি পরিষ্কার বাটির মধ্যে সামান্য প্রস্রাব সংগ্রহ করতে হবে।এবার এতে এক টেবিল চামচ চিনি ঢেলে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।
যদি দেখেন বাটিতে চিনি দেওয়ার পরও চিনি গলে যাচ্ছে না তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনি গর্ভবতী। সাধারণত এই উপায় গুলো অবলম্বন করে খুব সহজেই প্রেগনেন্সি টেস্ট করা যায়।
তাছাড়া প্রেগনেন্সি টেস্ট করার আরো অনেক ঘরোয়া উপায় রয়েছে সেগুলো তেমন বেশি কার্যকরী নয় বলে না করাই ভালো।
কতদিন পর প্রেগনেন্সি টেস্ট করালে সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়?
অনেকের প্রশ্ন রয়েছে কতদিন পর প্রেগনেন্সি টেস্ট করলে সঠিক ফলাফল টা পাওয়া যায়।সাধারণত যত তাড়াতাড়ি বা দ্রুত গর্ভধারণের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় ততো তাড়াতাড়ি গর্ভের শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা মেনে চলা যায়।
সাধারণত কেউ যখন গর্ভবতী হয়ে থাকেন তার প্রথম মাসে তেমন কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না । মাসিকের নির্দিষ্ট সময় পরও মাসিক না হয়ে থাকলে এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ছাড়া মিলন করলে মাসিক মিস হওয়ার প্রথম দিনই প্রেগনেন্সি টেস্ট করা যেতে পারে।
প্রেগনেন্সি টেস্টে সাধারণত গর্ভবতী নারীদের প্রস্রাবে একটি হরমোনের পরিমাণ শুরুর দিকে অল্প পরিমাণে থাকে। তাই সাধারণত ৩০-৪৫ দিনের মধ্যে প্রেগনেন্সি টেস্ট করা যেতে পারে।
mm kit খাওয়ার পরও প্রেগনেন্সি টেস্ট পজিটিভ আসে কেন?
অনেকেই mm কিট খাওয়ার পরও প্রেগনেন্সি টেস্ট করলে পজিটিভ এসে থাকে।অনেকের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটা হয়ে থাকে তাদের ভুল সময়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করানোর জন্য।
এমন অনেকেই আছেন যারা এম এম কিট খাওয়ার দুই থেকে চার দিন পরে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার জন্য চলে আসেন যার কারণে তাদের রিপোর্ট পজেটিভ আসে। তবে নিয়ম হচ্ছে এম এম কিট খাওয়ার তিন থেকে চার সপ্তাহ পর প্রেগনেন্সি টেস্ট করা।
তাছাড়া কেউ যদি ১০ দিন পর প্রেগনেন্সি টেস্ট করে থাকে তাহলেও হবে। তবে সব থেকে ভালো হয় এম এম কিট খাওয়ার পর আলট্রাসনোগ্রাফি করা তাহলে সঠিক রেজাল্টটা আপনারা দেখতে পারবেন।
প্রেগনেন্সি টেস্ট কিট এর নাম ও দাম?
প্রেগনেন্সি টেস্ট করার জন্য বর্তমানে অনেকেই নিচের ৪টি কিট ব্যবহার করে থাকেন। যেমনঃ
- Get Sure
- Good News
- Mam check
- I can
উপরে উল্লেখিত Get sure এবং Good news কিটের দাম ২০-৫০ টাকার মধ্যে নেওয়া হয়ে থাকে। আর তার নিচে যে দুটি কিটের নাম দেওয়া হয়েছে mam check এর দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা নেওয়া হয়ে থাকে।
এবং I Can কীটের দাম নেওয়া হয়ে থাকে ১০০ টাকা একটু বেশি। তাছাড়া বিভিন্ন স্থানে বা দোকান ভেদে দাম ভিন্নতর হতে পারে।
শেষ কথা, আশা করি আজকের পোস্টে যারা পড়েছেন তারা প্রেগনেন্সি টেস্ট করার নিয়ম বা কিভাবে খুব সহজেই প্রেগনেন্সি টেস্ট করা যায় এই বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন।
তারপরেও যদি কোন বিষয়ে সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই সরাসরি কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।