সাদা স্রাব কি প্রেগন্যান্সির লক্ষণ | সাদা স্রাব কেন হয়

আমাদের সমাজের মহিলারা প্রায়শই যোনি থেকে সাদা স্রাবের অভিযোগ করেন। যে সব নারীদের সাদা স্রাব বেশি হয়, তাদের নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। আর যাইহোক, প্রতিটি নারীকে কোনও না কোনও সময় সাদা স্রাব সম্পর্কিত সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।সাদা স্রাব কি প্রেগন্যান্সির লক্ষণWhite Discharge কিছু পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইহা আপনার খারাপ স্বাস্থ্যের কারণে হতে পারে। চলুন জেনে নেই সাদা স্রাব সম্পর্কে বিস্তারিত।

সাদা স্রাব কি?

সাদা স্রাব হল নারীদের বিশেষ ধরনের একটি সমস্যা। অধিকাংশ সাদা স্রাব জীবনশৈলী এবং শারীরবৃত্তীয়। সাধারণত স্বাভাবিক স্রাব পাতলা এবং সামান্য চটচটে হয়। ইহা অনেকটা সর্দির মতো। যার কোন ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন হয় না।

তবে প্রচুর পরিমাণে সাদা স্রাব হলে, সঙ্গে রক্ত গেলে ও তা দুর্গন্ধযুক্ত হলে, স্বাভাবিক রঙের না হলে গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে।

সাদা স্রাব হওয়ার কারণ?

  • জন্ম বিরতিকরণ পিল খেলে
  • মানসিক অশান্তি
  • কৃমির সংক্রমণ হলে
  • জরায়ূতে চুলকানি অথবা জ্বালাপোড়া থাকলে
  • আন্ডার গার্মেন্টস এ দাগ লেগে থাকলে
  • ছোঁয়াচে যৌন রোগ
  • চোখের নিচ গর্ত হয়ে যাওয়া
  • চোখের নিচে কাল হয়ে যাওয়া
  • বদ হজম
  • অতিরিক্ত সাদা স্রাব এর কারণে কোমরে ব্যাথা করে
  • গন্ধ যুক্ত সাদাস্রাব নিঃসরণ
  • তলপেট ভারি হয়ে থাকা
  • শরীর দুর্বল লাগা
  • মুখের মলিনতা নষ্ট হয়ে যাওয়া সহবাসের সময় যৌনিতে জ্বালা করা
  • স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে রাখা
  • অপরিচ্ছন্ন অন্তর্বাস পরিধান করলে
  • জামা কাপড় ব্যবহার করলে
  • পুষ্টির অভাব
  • পিরিয়ডের সময়কালীন এক স্যানিটারি ন্যাপকিন দীর্ঘক্ষণ ধরে ব্যবহার করলে
  • অপর্যাপ্ত বিশ্রামের কারণে
  • ভুল জীবনযাত্রা কারণে

সাদা স্রাবের রং কেমন?

বেশিরভাগ নারীদের পিরিয়ড সার্কেলের সময় অনেক ধরনের সাদা স্রাব হয়। সাধারণত দিনে ১ চা চামচের চারপাশে পরিষ্কার সাদা স্রাব থাকে। ইহা ঘন কিংবা পাতলা উভয় হতে পারে।

যদি এর রঙ সাদা হয় ও তাতে কোন ধরনের গন্ধ না আসে, তাহলে ইহা স্বাভাবিক। তবে কখনও কখনও ইহা হালকা হলুদ রঙেরও হতে পারে।

সাদা স্রাব এর হোমিও ঔষধ?

সাদা স্রাব এর হোমিও ঔষুধের নাম হল (Pelvi Aid)।

সাদা স্রাব কখন শুরু হয়?

মেয়েদের প্রথম ঋতু চক্রের পর সাদা স্রাব বা যোনিপথে তরল বের হতে শুরু করে। তবে পিরিয়ডের আগে ও পরে প্রতি মাসে যদি ইহা ঘটে। যদি এর সাথে যুক্ত কোনও সমস্যা না থাকে। তবে তা স্বাভাবিক হিসাবে বিবেচিত করা হয়।

সাদা স্রাব এর ঔষধ কি | মেয়েদের সাদা স্রাব বন্ধ করার ঔষধ | সাদা স্রাব বন্ধ করার ঔষধ

  • Metryl 400 Tablet
  • Lecosav Syrup
  • Fentizol vt 600
  • Flugal 150 Capsule

সাদা স্রাব হলে কি নামাজ হবে?

হ্যাঁ, সাদা স্রাব হলে নামাজ হবে। তবে এই বিষয়ে কিছু মতো বিরোধ রয়েছে।

সাদা স্রাব হলে কি মাসিক হয়?

হ্যাঁ, সাদা স্রাব হলে মাসিক হয়।

অতিরিক্ত সাদা স্রাব হলে কি হয়?

অতিরিক্ত সাদা স্রাব হলে রক্তল্পতা, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ এবং যৌ*ন সংক্রামিত রোগের কারণ হতে পারে।

সাদা স্রাব হলে কি বাচ্চা হয়?

হ্যাঁ, সাদা স্রাব হলে বাচ্চা হয়।

মাসিকের কতদিন আগে সাদা স্রাব হয়?

সত্যি বলতে মাসিকের কতদিন পূর্বে সাদা স্রাব হয়, তা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। সাধারণত পিরিয়ড শুরুর পূর্বে এই সাদা স্রাব নির্গত হওয়া খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়।

বাচ্চা পেটে আসলে কি সাদাস্রাব হয়?

হ্যাঁ, বাচ্চা পেটে আসলে সাদাস্রাব হতে পারে।

সাদা স্রাব হলে কি রোজা হবে?

হ্যাঁ, সাদা স্রাব হলে রোজা হবে।

সাদা স্রাব বন্ধ করার ঘরোয়া উপায়?

যদিও সঠিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য ১ জন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ। তবে কিছু ঘরোয়া প্রতিকার রয়েছে, যা আপনার সাদা স্রাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। আর এই প্রতিকারগুলো হচ্ছেঃ

নিম পাতা

নিম পাতা যো*নির পিএইচ এর ভারসাম্য বজায় রাখে। যা অতিরিক্ত সাদা স্রাব কমাতে সাহায্য করে।

চা গাছের তেল

নারকেল তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ট্রি অয়েল মিশিয়ে যো*নি এলাকায় লাগান। যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে ও স্রাব নিয়ন্ত্রণে সাহায্যে করে।

রসুন

রসুনের রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণাবলি। যা সাদা স্রাবের সংক্রমণের চিকিৎসায় সাহায্য করে।

মেথি বীজ

হরমোন নিয়ন্ত্রণে মেথির বীজ সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেলে যো**নিপ*থের সাদা স্রাব কমাতে সাহায্য করে।

আপেল সাইডার ভিনেগার

যো*নির পিএইচ স্তর নিয়ন্ত্রণের জন্য আপেল সিডার ভিনেগার গরম পানিতে পাতলা করে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

ক্র্যানবেরি জুস

মিষ্টি ছাড়া ক্র্যানবেরি জুস পান করলে মূত্রনালীর সংক্রমণ রোধে কাজ করে। যা সাদা স্রাবের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।

দই

ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য পুনরুদ্ধারে দই খাওয়া বা যোনি এলাকায় প্রয়োগ করা একটি ভাল উপায়। যা আপনার অতিরিক্ত সাদা স্রাব হ্রাস করতে পারে।

মনে রাখবেন, এই প্রতিকারগুলো আপনার সাময়িক পরিত্রাণ দিতে পারে। তবে সঠিক রোগ নির্ণয় ও উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া একান্ত জরুরি।

সাদা স্রাব প্রতিরোধে করণীয়?

  • কখনও খালি পেটে থাকবেন না।
  • জরায়ূ খুব বেশি চুলকালে কুসুম গরম পানিতে লবন দিয়ে, জরায়ূরর মুখ ভাল করে ধুতে হবে।
  • স্যানিটারি ন্যাপকিন পাঁচ ঘণ্টা অন্তর বদলাতে হবে।
  • জরায়ূরর মুখ সব সময় পরিষ্কার ও শুকনো রাখতে হবে।
  • মনে রাখবেন জরায়ূর মুখ ভেজা থাকে বলেই বেশি ইনফেকশন হয়।

সাদা স্রাব নিয়ে কিছু পরামর্শ?

ব্যক্তিগত পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে। এ সময় কুসুম গরম পানি এবং কম ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করতে হবে। কোন ধরনের সুগন্ধি স্প্রে ব্যবহার করবেন না। পুষ্টিকর খাবার এবং পর্যাপ্ত পানি পান করবেন। খাবার তালিকায় রসালো ফল এবং শাকসবজি রাখতে হবে।

খাওয়া দাওয়া ঠিকমতো করতে হবে, দুশ্চিন্তা ত্যাগ করতে হবে। এছাড়াও সাদা স্রাবে সমস্যা দেখা দিলে তা ভয়ানক হওয়ার পূর্বেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

Leave a Comment