কন্জাঙ্কটিভাইটিস হল আমাদের চোখের ভাইরাসজনিত একটি ইনফেকশন। প্রচলিত কথায় চোখ ওঠা বলতে আমরা চোখ লাল হওয়াকে বুঝে থাকি। কিন্তু চোখ লাল হওয়া হল একটি চোখের উপসর্গ মাত্র।বিভিন্ন কারণে আপনার চোখ লাল হতে পারে।যেমনঃ জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলে, স্কেলেরার ইনফেকশনজনিত কারণে, এডিনো ভাইরাসজনিত কারণে, হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসজনিত কারণে, ইউভিয়াল টিস্যু ইনফেকশনজনিত কারণে।
তবে ভাইরাস কেরাটাইটিস অথবা হারপেম সিমপেক্স হল চোখের ভাইরাসজনিত ইনফেকশন। এ ধরনের ইনফেকশনে সাধারণত প্রথমে এক চোখে আক্রান্ত হয়। পরবর্তীতে দু চোখেও হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চোখ উঠার ইংরেজি কি?
চোখ উঠার ইংরেজি প্রতিশব্দ হল Conjunctivitis (কনজাংটিভাইটিস)।
বাচ্চাদের চোখ ওঠার লক্ষণ?
- চোখ দিয়ে পানি পড়া।
- চোখের পাতা ফুলে যাওয়া।
- চোখ লাল হয়ে যাওয়া।
- প্রথমে সাধারণত ১ চোখ লাল হয়।
- পরে আরেক চোখ লাল হয়।
- চোখে পিচুটি পা কেতুর হয়।
- চোখ কর্নিয়া আক্রান্ত হলে চোখে ঝাঁপসা দেখতা পারেন।
- পিচুটি বা কেতুরের কারণে ঘুম থেকে ওঠার পর চোখের পাতা লেগে যেতে পারে।
- আলো অসহ্য লাগতে পারে।
- চোখে অস্বস্তি বোধ হওয়া অথবা খচখচ করা।
- চোখে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
চোখ ওঠা রোগ কেন হয়?
ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে চোখ ওঠা রোগ হয়। আবার কখনো কখনো অ্যালার্জির কারণেও চোখ উঠতে পারে। যে মৌসুমে বাতাসে আদ্রতা বেশি থাকে, সেই সময় চোখ উঠা রোগটি বেশি হয়।
বাচ্চাদের চোখ উঠলে করণীয়?
বাচ্চাদের চোখ উঠলে ১ জন অভিভাবককে নিচের উল্লেখিত বিষয়গুলোর প্রতি খেয়াল রাখতে হবেঃ
- আপনার সন্তানের হাত পরিষ্কার রাখুন যেন তারা তাদের চোখ স্পর্শ না করে।
- আপনার সন্তানের মুখ ও চোখ পরিষ্কার করার জন্য একটি তোয়ালে ব্যবহার করুন।
- চোখ উঠা সংক্রমণের সময় কন্টাক্ট লেন্স বা চোখের মেকআপ ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন।
- অস্বস্তি উপশম করতে ও চোখের ফোলা কমাতে উষ্ণ কম্প্রেস ব্যবহার করুন।
- ১টি তুলোর বল গরম পানিতে ভিজিয়ে নরম কাপড় দিয়ে আপনার সন্তানের চোখ আলতোভাবে পরিষ্কার করুন।
- আপনার সন্তানের সাথে তোয়ালে, বালিশ কিংবা অন্যান্য ব্যক্তিগত জিনিস শেয়ার করবেন না।
- চোখের ড্রপ বা মলম দেওয়ার পূর্বে এবং পরে আপনার হাত ভালভাবে ধুয়ে নিন।
- নিশ্চিত করবেন যে আপনার শিশু অ্যান্টিবায়োটিকের নির্ধারিত কোর্স শেষ করেছে যদি তারা নির্ধারিত করা হয়।
- চোখের মেকআপ বা চোখের যত্নের পণ্যগুলো পরিত্যাগ করুন।
- যা সংক্রমণের সময় ব্যবহার করা হয়েছিল।
- যদি লক্ষণগুলো আরও খারাপ হয় বা আপনার সন্তানের দৃষ্টি প্রভাবিত হয়।
- তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন৷
বাচ্চাদের চোখের ড্রপ নাম | বাচ্চাদের চোখ উঠার ড্রপ | বাচ্চাদের চোখের ড্রপের নাম
- Opsophenicol (Eye Drop)
- Iventi (Eye Drop)
- Optimox (Eye Drop)
- Supraphen (Eye Drop)
- Cloram Eye Drop
- Lomeflox (Eye Drop)
- SQ- Mycetin (Eye Drop)
বিদ্রঃ ১ জন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ভুলেও এ ধরনের ড্রপ আপনার বাচ্চার চোখে ব্যবহার করবেন না অথবা আপনার চোখে ব্যবহার করবেন না। চোখ হল আমাদের অমূল্য সম্পদ। অবশ্যই সব সময় সাবধান থাকবেন।
চোখ উঠা সারতে কতদিন লাগে?
৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই চোখ উঠা রোগ ভাল হয়ে যায়। তবে, কারও কারও ক্ষেত্রে হয়তো পনেরো দিনের মতো সময় লাগতে পারে।
চোখ উঠা কি ছোঁয়াচে?
হ্যাঁ, চোখ উঠা ছোঁয়াচে রোগ।
চোখ উঠা ভাইরাসের নাম কি?
চোখ উঠা ভাইরাসের নাম হচ্ছে কেরাটাইটিস বা হারপেম সিমপেক্স ভাইরাস। এই ভাইরাসটি কারণে চোখের রোগের হয়। এছাড়াও আরও কিছু ভাইরাস রয়েছে যার কারণে চোখ উঠে।
চোখ উঠা কি ভাল?
চোখ উঠা হল একটি সাধারণ বিষয়। চোখ উঠা ভাল কিংবা মন্দ কোনটাই নয়।
চোখ উঠলে কি কি খাওয়া যাবে না?
- প্রসেসড মিট
- রিফাইন্ড খাবার
- অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার
- মার্জারিন
- ডুবো তেলে ভাজা খাবার
- ক্যান ফুড
চোখ উঠলে কি কি খাবার খাওয়া উপকারী?
- হলুদ ও কমলা রঙের ফল
- সবুজ শাক
- পিংক সল্ট
চোখ উঠা কত দিন থাকে?
চোখ উঠা রোগ ৭ থেকে ১০ দিন থাকে।
সাবধনতা
ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ধরনের ওষুধ সেবন করা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।