আমাদের শরীরের জন্য রক্ত খুবই উপকারী। কেননা রক্তে রয়েছে কার্যকরী বিভিন্ন উপাদান যা আমাদের শরীরের সঠিক কার্যকারিতা বজায় রাখতে সাহায্য করে থাকে। অনেকের দেখা যায় রক্তের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে বা কমে গিয়েছে।শ্বেত রক্তকণিকা বাড়া ও কমার কারণে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে। তাই এটি যেন না ঘটে এই বিষয়ে আমাদের সকলেরই সচেতন থাকতে হবে। রক্তের শ্বেত রক্তকণিকা হঠাৎ করে বেড়ে গেলে কি করণীয় এই বিষয়ে পোস্টে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা থাকছে।
পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে শ্বেত রক্তকণিকা কমানোর উপায়, শ্বেত রক্তকণিকা বেশি হলে কি হয়, শ্বেত রক্তকণিকা কোথায় তৈরি হয় ও শ্বেত রক্তকণিকা কমে গেলে বাড়ানোর জন্য কি কি করতে হয় এই নিয়ে জানানো হবে।
শ্বেত রক্তকণিকার কাজ কি?
শ্বেত রক্তকণিকা হচ্ছে সাধারণত আমাদের ইউনিয়ন সিস্টেমের একটি অংশ। শ্বেত রক্ত কণিকার কাজ হলো শরীরকে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা।
শ্বেত রক্তকণিকা এন্টিবডি সৃষ্টির মাধ্যমে কোন রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। কৃমির লাভা ও এলার্জিক এন্টি বডি দূর করতেও শ্বেত রক্ত কণিকার ভূমিকা রয়েছে।
শ্বেত রক্তকণিকা কমানোর উপায়?
শ্বেত রক্তকণিকা সাধারণত লসিকা গ্রন্থি বায়োসেন্সের মাধ্যমে সনাক্ত করা যায়। সঠিক ঔষধের মাধ্যমে এই রোগের চিকিৎসা গ্রহণ করা যায়। অনেক ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা আগের পর্যায়ে ফিরিয়ে আনতে কেমোথেরাপি পর্যন্ত করা হয়ে থাকে।
নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে
শ্বেত রক্তকণিকা কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা খুবই জরুরী। নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে আমাদের শরীরের স্ট্রেস লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে ও শ্বেত রক্ত কণিকার সংখ্যা কমতে থাকে।
ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে
ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার শ্বেত রক্ত কণিকা কমানোর জন্য দারুন একটি ঔষধি। শ্বেত রক্ত কণিকার সংখ্যা কমাতে চাইলে নিয়মিত ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।
হলুদ খেতে হবে
হলুদের রয়েছে অসংখ্য গুন।হলুদ আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান। শ্বেত রক্তকণিকা অতিরিক্ত হারে বেড়ে গেলে হলুদ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা যেতে পারে। কেননা নিয়মিত হলুদ খেলে শ্বেত রক্তকণিকা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার খেতে হবে
শ্বেত রক্তকণিকা কমানোর জন্য ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খেতে হবে। ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে শ্বেত রক্তকণিকা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
শ্বেত রক্তকণিকা কোথায় তৈরি হয়?
শ্বেত রক্তকণিকা অস্থিমজ্জায় তৈরি হয়ে থাকে। শ্বেত রক্তকণিকা সঠিক পরিমাণে থাকা আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী। শ্বেত রক্তকণিকা হঠাৎ করে কমে গেলে বা বেড়ে গেলে অনেক রোগের ঝুঁকি দেখা দিয়ে থাকে।
শ্বেত রক্তকণিকা কমানোর খাবার?
শ্বেত রক্তকণিকা হলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে ও ডাক্তারের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
শ্বেত রক্তকণিকা কমানোর জন্য ডাক্তার যদি কোন খাবার তালিকা করে দেন তাহলে সেই অনুযায়ী খেতে হবে। কখনোই নিজে থেকে রক্ত কণিকা কমানোর জন্য কোন ওষুধ গ্রহণ বা খাবার খাওয়া যাবে না।
শ্বেত রক্তকণিকার গড় আয়ু কত দিন?
একজন স্বাস্থ্যকর প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির শরীরে শরীরের প্রতি সেকেন্ডের প্রায় দুই মিলিয়ন রক্ত কণিকা তৈরি করে। এদের মধ্যে ৯৯ শতাংশ অক্সিজেন বহনকারী লোহিত রক্তকণিকা।
আর অন্য এক শতাংশ হলো প্লেটলেট ও ইমিয়ন সিস্টেমের বিভিন্ন শ্বেত রক্তকণিকা।শ্বেত রক্তকণিকার গড় আয়ু ১০ থেকে ২০ দিন।
শ্বেত রক্তকণিকা কমে গেলে কি রোগ হয়?
অস্থি মজ্জার মাধ্যমে শ্বেত রক্তকণিকা তৈরি হয়ে থাকে। শ্বেত রক্তকণিকা আমাদের শরীরকে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে থাকে। শ্বেত রক্তকণিকার পরিমাণ হঠাৎ করে অনেক কমে গেলে বা যদি স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যায় তখন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক দুর্বল হয়ে যায়।
শ্বেত রক্ত কণিকার পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে লিউকোমিয়া, অটো ইমুনো ডিজিজ এর মতো রোগের সৃষ্টি হতে পারে।
শ্বেত রক্তকণিকা বেড়ে গেলে কি রোগ হয় | শ্বেত রক্তকণিকা বেশি হলে কি হয়
অনেকের রক্তে শ্বেত রক্ত কণিকার মাত্রা হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। শ্বেত রক্তকণিকা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে গেলে ক্যান্সারের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। প্রথম অবস্থায় ক্যান্সারের লক্ষণ দেখা দেয় ও পরবর্তীতে রোগী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
উপসংহার
শ্বেত রক্তকণিকা কমানোর উপায় বা শ্বেত রক্তকণিকা কমে গেলে কি কি রোগ দেখা দেয় ইতিমধ্যে এই বিষয়ে জানা হয়ে গিয়েছে।
তাই অবশ্যই স্বাস্থ্যকর জীবনধারা ও পুষ্টিকর কিছু খাবার খাওয়ার মাধ্যমে শ্বেত রক্তকণিকা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। পোস্টটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকলে শেয়ার করে অন্যদের দেখার সুযোগ করে দিন।