আপনার যদি পেট পরিষ্কার থাকে তাহলে মুখে ফুটবে হাসি। সারাদিন মেজাজও থাকবে ফুরফুরে। আর এই পেট যদি আপনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে। তাহলে তো কোন কথাই নেই।
তখন পেট খোলসা করতে গেলেই বিপদর পড়বেন। মলদ্বার থেকে ঝুলন্ত মাংসপিণ্ড বা পায়ুপথে নলের মতো বেরিয়ে থাকা অংশ হল মাংসল। পাইলস, ফিসার ও ফিস্টুলা পায়ুদ্বারেরই ৩টি অসুখ।অনেকেই এই ৩ ধরনের রোগকে গুলিয়ে ফেলেন। পাইলস, ফিস্টুলা ও ফিসার এর মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন না। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগন বলছেন, পাইলস, ফিস্টুলা ও ফিসার এ তিনটি রোগ এক নয়।
এই তিন রোগের উৎস মলদ্বার হলেও এদের মধ্যে রয়েছে বিস্তার পার্থক্য। এ রোগগুলো লক্ষণ ও চিকিৎসাপদ্ধতিও ভিন্ন। পাইলস, ফিস্টুলা, ও ফিসার সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। পায়ুদ্বারের মুখে এই তিন ধরনের রোগই দেখা দিতে পারে।
খারাপ লাইফস্টাইলের জন্য এখন এ ধরনের রোগ প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষের মধ্যেই দেখা দিচ্ছে। কারও মধ্যে এ রোগের লক্ষণ প্রকট, কারও আবার কম। চলুন জেনে নিন কোন রোগ কেমন ও কি কি তাদের লক্ষণ।
পাইলস ফিশার ও ফিস্টুলা মধ্যে পার্থক্য?
পাইলস
পাইলস হচ্ছে অ্যানাল ক্যানালের রোগ। পায়ু পথের শিরা ছিঁড়ে গিয়ে পাইলস হতে পারে। এ রোগের ডাক্তারি নাম হল হেমারয়েড। এই রোগের অন্যতম প্রধান কারণ হল কোষ্ঠকাঠিন্য। এ সময় রোগীর মলত্যাগে বাধা, পায়ু পথের শিরায় রক্ত চলাচলে বাধা আসে।
অনেক সময় চাপ পড়ে শিরাগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অনেকের ক্ষেত্রে শিরা ছিঁড়ে গিয়ে বেশি রক্তপাতও হয়ে থাকে। তখন রোগীকে অস্ত্রোপচার করাতে হয়। ক্রনিক ডায়ারিয়া, বেশি ওজন কিংবা ওবেসিটি, পানি কম খাওয়া, ডিহাইড্রেশন, লিভারের রোগ
কিংবা লিভার সিরোসিস থাকলেও পাইলস হানা দিতে পারে। পেটের টিউমার থেকেও অর্শ বা পাইলসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ফিস্টুলা
পায়ুদ্বারের গঠনের জন্য মলত্যাগ সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ইহা দেখতে অনেকটা ইলাস্টিকের মতো হয়। যার ফলে প্রয়োজন মতো সেই জায়গা প্রসারিত এবং সংকুচিত করা যায়।
কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্য হলে বার বার মলত্যাগের জন্য সেই জায়গায় অসংখ্য ছোট ছোট শিরা ও উপশিরাগুলো বেরিয়ে আসতে থাকে। অনেক সময় ওই জায়গাটা ছিঁরে যায়। সেখান থেকে রক্ত বের হয়ে আসে।
ইনফেকশনও হয়ে যেতে পারে। ফিস্টুলা পায়ু পথে অনেকটা নলের মতো গঠন করে। আর এই নলের একদিক থাকে ভেতরে এবং অন্যদিক পায়ুদ্বারের ঠিক পাশেই থাকে। ওই সংযোগ পথ দিয়েই তখন স্টুল, জলীয় অংশ বের হতে থাকে।
এ সময়ে একটা চ্যানেল তৈরি হয়ে যায়। ওই পথে ধীরে ধীরে সংক্রমণ বাড়তে বাড়তে নলের মুখটা ফেটে যায়। সেখান দিয়ে পুঁজ, রক্ত বের হতে থাকে। ফিসচুলায় যন্ত্রণা তো হয়ই। তার সঙ্গে ভীষণ দুর্গন্ধযুক্ত তরল পদার্থ বের হয়।
ফিসার
শক্ত মলের জন্য আমাদের পায়খানা করার সময় মলদ্বারের ভিতরের অংশ কেটে যায়। এ সময় খুব জ্বালা ও যন্ত্রণা করে। রক্ত বের হয় তবে তার পরিমাণ কম। আর এই সমস্যার নাম হচ্ছে ফিসার।
মূলত এ সময় রেক্টামের নিম্নাংশের প্রান্তরেখা বরাবর ছিঁড়ে যায়। যার ফলে ওই মুখ থেকে রক্তপাত হয়। একটা চামড়া বের হয়ে ঝুলতে থাকে। এক্ষেত্রে প্রথমে চিকিৎসা নিলে এ সমস্যা মেটানো সম্ভব।