মৌমাছি সম্পর্কে অজানা তথ্য | মৌমাছি কামড়ের চিকিৎসা

মৌমাছির বৈজ্ঞানিক নাম কি?

মৌমাছির বৈজ্ঞানিক নাম হল (Anthophila)।

মৌমাছির কামড় কি?

মৌমাছির কামড় হল একটি মৌমাছির দংশন। যা প্রচন্ড কষ্টকর হয়। মৌমাছির কামড় সাধারণত অন্যান্য পতঙ্গদের কামড়ের তুলনায় বেশী ব্যথা হয়।

কারণ হল তাদের শরীরে অ্যাসিডের উপস্থিতি আছে, সে কারণে শরীরে ভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

মৌমাছি কামড়ের লক্ষণ ও উপসর্গগুলো কি কি?

মৌমাছির কামড় প্রতিটি ব্যক্তির জন্য আলাদা আলাদা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। অথবা একই ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। এই প্রতিক্রিয়াগুলো বিস্তীর্ণরূপে লঘু, মাঝারি ও গুরুতর হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়ে থাকে।মৌমাছি সম্পর্কে অজানা তথ্যলঘু প্রতিক্রিয়া সাধারণত ১ দিনের কম সময়ের মধ্যে সেরে যায়। কামড়ানোর জায়গায় জ্বালার ও ব্যথার অনুভূতি হয় লালচে ভাব এবং সামান্য ফোলাভাব হবে। মাঝারি প্রতিক্রিয়া সারতে সাধারণত প্রায় এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।​

ফোলাভাব যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়, এবং লালচে ভাব বেশ কিছুদিন ধরে থাকে। ​গুরুতর প্রতিক্রিয়া যাকে অ্যানফাইলাক্টিক প্রতিক্রিয়াও বলা হয়ে থাকে। ইহা বেশ মারাত্মক হতে পারে ও সেটি চিকিৎসাগত জরুরি অবস্থা বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।

যাতে করে তাৎক্ষনিক চিকিৎসার প্রয়োজন হবে। ​প্রচন্ড পরিমাণ চুলকানি ও ত্বক ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া, মাথা ঘোরা, বমিভাব, দুর্বলতা ও ক্লান্তি, শ্বাস নিতে সমস্যা, জ্ঞান হারানো ইত্যাদি হতে পারে।

মৌমাছি কামড়ালে ফুলে যায় কেন?

মৌমাছি কামড়ালে আগে যন্ত্রণা বা জ্বালা করে তারপরে ফুলে যায়। মানুষের শরীরের মাংসে হুলের সাথে অম্লীয় পদার্থ ফেরোমন ঢেলে দেয়। আর এতে ওই জায়গাটা একটু সময়ের জন্য অবশ হয়ে যায় ও এরপর জ্বালা করতে থাকে।

মৌমাছির বিষে শতকরা ৮৮ ভাগই পানি রয়েছে। আর এই পানির কারণে প্রাণী দেহের আর্দ্র কোষের ভেতর বিষ দ্রুত ছড়িয়ে যেতে পারে। ফেরোমন ব্যতীত মৌমাছির বিষ হচ্ছে গন্ধহীন তরল।

যার pH হল ৪.৫ থেকে ৫.৫। মৌমাছির দংশনে ব্যাথার জন্য প্রধান উপাদানটি হল মেলিটিন (Melittin)। আর এই উপাদান বিষের শুষ্ক ওজনের শতকরা ৫০ ভাগ থাকে।

মেলিটিন দংশনের স্থানের লোহিত রক্তকণিকাকে ভেঙে ফেলে ও রক্তনালীকে প্রসারিত করে থাকে। আর রক্তনালীর প্রসারণের জন্য অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তচাপ কমে যায়।

মেলিটিন ছাড়াও ফসফোলাইপেজ এ২ (Phospholipase A2) নামক প্রোটিন থাকে। যা কোষ আবরণীকে ধ্বংস করে থাকে। ইহা ব্যথা ও প্রদাহের কারণ। বিষের শতকরা ৯ ভাগই হচ্ছে হিস্টামিন।

যার কারণে কৈশিকনালীর ভেতর থেকে তরল পদার্থ বেরিয়ে আসে। আর এ কারণেই মৌমাছি কামড়ালে চুলকানির ন্যায় লাল বিন্দু দেখা যায় বা ফুলে যায়।

মৌমাছি কামড়ালে চুন দেয় কেন?

মৌমাছি কামরে এসিড থাকে। চুন সাধারণত ক্ষার। তাই মৌমাছির ক্ষত স্থানে চুন দিলে তা এসিডের সঙ্গে প্রশমন বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে ব্যথা কমিয়ে দেয়।

মৌমাছি কামড়ের চিকিৎসা?

মৌমাছির কামড় অত্যন্ত বিষাক্ত এবং যন্ত্রণাদায়ক হয়। হঠাৎ করে মৌমাছি কামড়ালে দিশাহারা হয়ে যাবেন না। তাৎক্ষনিক জ্বলুনি কমানোর জন্য ব্যবহার করতে পারেন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান। মৌমাছির হুল হচ্ছে খুবই বিষাক্ত।

আর তাই ব্যথা এবং জ্বলুনি কমার সাথে সাথে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াটা খুবই জরুরি। চলুন জেনে নেই মৌমাছি কামড়ের চিকিৎসাঃ

বরফ দিন

মৌমাছি কামড়ে জ্বলুনির সাথে সাথে রক্ত বের হলে, আক্রান্ত স্থানে বরফ দিয়ে চেপে ধরুন। আর এতে রক্ত বন্ধ হবে এবং ব্যথা কমবে।

টুথপেস্ট

মৌমাছির কামড়ানোর সাথে সাথে শুরু হয় তীব্র জ্বালা যন্ত্রণা। আক্রান্ত স্থানে আধা ঘন্টা টুথপেস্ট লাগিয়ে রাখুন। ইহা জ্বলুনি কমার পাশাপাশি মৌমাছির বিষও দূর করবে।

মধু

তুলা দিয়ে বল তৈরি করে মধুতে ভিজিয়ে আক্রান্ত স্থানে চেপে ধরুন। এরপর ধীরে ধীরে ব্যথা এবং জ্বলুনি কমে যাবে।

রসুন

মৌমাছি কামড়ালে কয়েকটি রসুন ছেঁচে আক্রান্ত স্থানে লাগান। এরপর একটি টাওয়েল পেঁচিয়ে নিন উপরে। দেখবেন আধা ঘণ্টার মধ্যে জ্বলুনি কমে যাবে।

বেকিং সোডা

বেকিং সোডার পেস্ট এবং ভিনেগার এক সাথে মিশিয়ে ত্বকের যেখানে মৌমাছি কামড়েছে সে স্থানে লাগান। এরপর আধা ঘণ্টা লাগিয়ে রাখুন। ইহা মৌমাছির হুলের বিষ দূর করবে।

মাটি

বাগানে কাজ করছেন এমন সময় যদি মৌমাছি আপনাকে আক্রমণ করে? সাথে সাথে খানিকটা মাটি পানির সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে নিন। এরপর শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।

ল্যাভেন্ডার অয়েল

অপরিহার্য অয়েল ব্যবহারে যদি আপনার ত্বকে ফুসকুড়ি না ওঠে। তবে আক্রান্ত স্থানে নিশ্চিন্তে ইহা ব্যবহার করতে পারেন।

মৌমাছির হুলে কোন এসিড থাকে?

মৌমাছির হুলে মিথানয়িক এসিড বা ফর্মিক এসিড (HCOOH) থাকে।

Sharing Is Caring:

This website mainly provides information on exercise, fitness, wellness, healthy living, etc. in the Bengali language.

Leave a Comment