পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা | পাইলস হলে কি কি খাওয়া নিষেধ

অর্শরোগ বা পাইলস রোগে অনেকেই ভোগে থাকেন। ইহা খুবই পরিচিত একটি সমস্যা। এক সমীক্ষা বলছে, ৪৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সীদের মধ্যে এই রোগের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি থাকে। তবে কমবয়সীদের মধ্যেও এখন এই রোগের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসাজীবনযাত্রায় অনিয়ম এবং অপুষ্টিকর খাবার খাওয়া এই রোগের অন্যতম কারণ। কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস কিংবা হজমের সমস্যার কারণে পাইলস রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এছাড়াও পরিবারে কারও যদি এই সমস্যা থাকে।

 

তাহলে পরবর্তী সময়ে তা অন্যদেরও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পাইলস বিশেষজ্ঞদের মতে, ফাইবারযুক্ত খাবারের অভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, স্থূলতা, গর্ভাবস্থায়, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকার অভ্যাসসহ বিভিন্ন কারণে অর্শরোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পরে।

এক্ষেত্রে মলদ্বারে যন্ত্রণা, রক্ত পড়া, মলদ্বার ফুলে ওঠা, জ্বালা পোড়া করা ইত্যাদি পাইলস সাধারণ উপসর্গ। আর এই সমস্যা মোটেও পুষে রাখা উচিত নয়। অবশ্যই একজন চিকিৎসককের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

পাইলস বা অর্শ রোগ কি?

পায়ুপথ কিংবা পায়খানার রাস্তার মুখ যদি কোন কারণে ফুলে যায় ও সেখান থেকে রক্ত পড়ে অথবা পায়খানার রাস্তায় যদি গোটার মতো হয় তখন তাকে পাইলস বলে। Piles অপর নাম হল হেমারয়েডস (Hemorrhoids)। এক্ষেত্রে মলদ্বারে Anus প্রদাহ ও Inflammation হয়।

এই প্রদাহ মলদ্বারের ভিতর এবং বাইরে হতে পারে। এক্ষেত্রে পায়খানা পায়খানা করতে খুবই সমস্যা হয় ও প্রচণ্ড পরিমাণ ব্যাথা হয়। মলের সঙ্গে বেরিয়ে রক্ত আসে (Blood in Stool)। আর রক্ত দেখেই মানুষের মনে দেখা দেয় ভয় ও সংকোচ।

এক্ষেত্রে পাইলস বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পাইলস এর সমস্যা দেখা দিলে অনেকে পায়খানা করতে চান না। কারণ তাঁদের মনে ভয় থাকে পায়খানা করার পরই এ সমস্যা আরও বাড়বে।

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা?

সাধারণত ওষুধ বা অস্ত্রপচারের মাধ্যমে পাইলসের চিকিৎসা করা হয়। এর পাশাপাশি কয়েকটি নিয়ম মেনে ঘরোয়া উপায়েও অর্শরোগ রোগের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। নিচে অর্শরোগের সমস্যা সমাধানে কিছু ঘরোয়া উপায় দেওয়া হলঃ

ঘরোয়া উপায়ে অর্শরোগের সমস্যা সারাতে নিয়মিত মলদ্বারে বরফ ব্যবহার করতে পারেন। বরফ রক্ত চলাচল সচল রাখে এবং ব্যাথা দূর করে। একটি কাপড়ে কয়েক টুকরো বরফ পেঁচিয়ে ব্যাথার স্থানে দশ মিনিট রাখুন।

দিনে বেশ কয়েক বার করলে অর্শরোগের ব্যাথা দ্রুত সারবে। অর্শরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি তুলোর বলে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ব্যাথার স্থানে লাগিয়ে নিন। শুরুতে কিছুটা জ্বালাপোড়া হলেও কিছুক্ষণ পর তা কমে যাবে।

আর এই পদ্ধতিটি দিনে বেশ কয়েকবার ব্যবহার করুন। এছাড়াও নিয়মিত ১ চা চামচ আপেল সিডার ভিনেগার এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খালি পেটে পান করুন। ইহা অনেক রোগের দাওয়াই হিসেবে কাজ করে।

জাম ফল পাইলসের সমস্যা সারাতে বেশ কার্যকরী। এতে থাকে প্রচুর ভিটামিন এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। যা পাইলসের সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাইলসের রোগী দিনে ২ থেকে ৩টি জাম খেলে ধীরে ধীরে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠবেন।

পানিশূন্যতার কারণেও অর্শরোগের সমস্যা বাড়তে পারে। আর তাই দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করুন। এর পাশাপাশি আদাকুঁচি, লেবু এবং মধু মিশিয়ে দিনে অন্তত দুইবার খেলে পাইলস দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে।

এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। প্রতিদিন ১ চা চামচ অলিভ ডায়েটে রাখলে অর্শরোগের সামস্যা ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠবেন।

পাইলস বিশেষজ্ঞদের মতে, এই তেল শরীরে প্রদাহ খুব দ্রুত কমায়। ইহা পাইলস নিরাময়ের ক্ষেত্রেও খুবই কার্যকরী।

পাইলস হলে কি কি খাওয়া নিষেধ?

যে সকল খাবারে ফাইবার কম থাকে, সেই খাদ্যগুলো এড়িয়ে চলাই ভাল। বিশেষত রিফাইনারিতে তৈরি দানা শস্য খেলে পাইলস এর সমস্যা বাড়তে পারেঃ

  • দুধ এবং পনির কিংবা চিজের মতো দুগ্ধজাত খাবারের পরিমাণ কামালে উপকার মিলতে পারে।
  • মদ্যপান বন্ধ করা আপনার জন্য একান্ত জরুরি।
  • বেশি পরিমাণ তেলে ভাজা খাবারও ডেকে আনতে পারে সমস্যা।
  • খাবারে অত্যধিক তেল, মশলা এবং নুন থাকলে পেটের গোলযোগ দেখা দিতে পারে।
  • পাইলস বিশেষজ্ঞদের মতে, মাংস খাওয়া অর্শ রোগীদের পক্ষে খুব একটা ভাল নয়।
  • বাজারে চলতি প্রক্রিয়াজাত মাংস বাড়িয়ে দিতে পারে আপনার অর্শ রোগের সমস্যা।
Sharing Is Caring:

This website mainly provides information on exercise, fitness, wellness, healthy living, etc. in the Bengali language.

Leave a Comment