আসসালামু আলাইকুম আশা করি সকলে ভালো আছেন। আজকের পোস্টে mm kit খাওয়ার নিয়ম, mm kit এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং এই পিল খেলে কি হয়ে থাকে সেই সম্পর্কে জানতে পারবেন।তাই যারা এই বিষয়ে জানতে চান তারা অবশ্যই আজকের পোস্টটি বিস্তারিত এবং মনোযোগ সহকারে করবেন। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ
mm kit এর কাজ কি?
সাধারণত অসাবধানবসত কেউ প্রেগন্যান্ট হয়ে গেলে তাদের মাসিক নিয়মিত করার জন্য এই ঔষধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ নষ্ট করে মেয়েদের মাসিক নিয়মিতকরণ করার জন্য এই ট্যাবলেট ডাক্তার রোগীদের কে ব্যবহার করতে বলে থাকেন।
এমকিট ট্যাবলেট সাধারণত গর্ভধারণের ৬৩ দিন বা ৯ সপ্তাহের মধ্যে গ্রহণ করতে হয়। রোগীকে এম কিট ঔষধ খাওয়ানোর আগে অবশ্যই জেনে নিতে হবে রোগী ইতিমধ্যে গর্ভবতী হয়েছে কিনা।
এর জন্য সরাসরি ফার্মেসিতে চলে যেতে হবে এবং সেখান থেকে প্রেগন্যান্সি কিট নিয়ে পরীক্ষা করে আগে কনফার্ম হয়ে নিতে হবে। যখন প্রেগনেন্সি কনফার্ম হয়ে যাবে তখন নয় সপ্তাহ থেকে ৬৩ দিনের মধ্যে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই কীট গ্রহণ করতে হবে।
সাধারণত এম কিটের প্যাকেটে পাঁচটি ট্যাবলেট থেকে থাকে। আর এখানে থাকে চারটি বড় ট্যাবলেট এবং একটি ছোট ট্যাবলেট। আপনাদেরকে এম কিট প্রথমে বড় ট্যাবলেট খেতে হবে।
এবং এর ঠিক ২৪ ঘন্টা পর বাকি চারটি ট্যাবলেট প্যাকেট থেকে বের করে মুখের মধ্যে দুই পাশের মাড়ি ও গালের মধ্যে দুইটি করে tablet রেখে আপাতত আধাঘন্টা বসে রাখতে হবে।
অর্থাৎ ট্যাবলেট গুলো এমন ভাবে মুখের ভিতরে রাখতে হবে যেন আস্তে আস্তে গলে গলে সেগুলো পেটের ভিতরে চলে যায়।আর যদি মুখের ভিতরে লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই মুখের ভিতরে খানিকটা পানি নিয়ে খেয়ে ফেলতে হবে।
ওষুধগুলো সেবনের দুই সপ্তাহের মধ্যে ক্লিনিকে গিয়ে রোগীকে আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে চেক করে নিতে হবে যে গর্ভপাত হয়েছে কিনা। যদি না হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই এই ক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
Mm kit খাওয়ার পর সাধারণত কত দিন রক্তপাত হয়?
mm kit খাওয়ার নিয়ম ইতিমধ্যে জেনে গিয়েছেন এবার জানতে হবে mm কিট খাওয়ার সাধারণত কতদিন পর রক্তপাত হয়ে থাকে।এম এম কিট খাওয়ার পর চার থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত ব্লিডিং হতে পারে।
কারো কারো ক্ষেত্রে দেখা যায় যে এম এম কিট খাওয়ার পর দশ দিন পর্যন্ত ব্লিডিং হচ্ছে। তবে এরপরও যদি রক্তপাত বন্ধ না হয়ে থাকে। তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
Mm kit এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া?
প্রতিটি ওষুধের যেমন কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে থাকে তেমনি এই ওষুধটিও রয়েছে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। নিচে mm kit খাওয়ার ফলে সৃষ্ট কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার লক্ষণ দেওয়া হলোঃ
- জ্বর আসা এবং মাথা ব্যাথার মত সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে
- বমি বমি ভাব আসতে পারে।
- শরীর দুর্বলতা এবং পেট ফাপার মত সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
- মাসিক কিছুদিন পিছিয়ে যেতে পারে। তাছাড়া মাসিকে তুলনামূলকভাবে বেশি রক্তক্ষরণ হতে পারে।
অর্থাৎ এই ঔষধ সেবন করার পর রোগীদের এই সকল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো দেখা দিতে পারে। তবে অবস্থা যদি খুবই গুরুতর হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত।
mm kit খাওয়ার পরও প্রেগনেন্সি টেস্ট পজিটিভ আসে কেন?
অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন এম এম কিট খাওয়ার পর প্রেগনেন্সি টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ আসে কেন। এম এম কিট খাওয়ার পরে তিন থেকে চার সপ্তাহের পর প্রেগনেন্সি কিট দিয়ে পরীক্ষা করলে সঠিক রেজাল্ট পাওয়া যায়।
এর আগে টেস্ট করলেও অনেক ক্ষেত্রে পজিটিভ এসে থাকে তবে mm কিট খাওয়ার দশ দিন পর আল্ট্রাসনোগ্রাফি করলে সঠিক রেজাল্ট পাবেন।
Mm kit খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয়?
অনেকেই এম এম কিট খাবার কতদিন পর মাসিক হয় এই নিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ করে থাকেন। দেখুন এম এম কিট খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে যার জন্য মাসিকের সময় অনেকটা পিছিয়ে যেতে পারে।
তবে এমন কিট খাওয়ার ২০ থেকে ২২ দিনের মধ্যে অনেকের মাসিক হয়ে যায় তবে অনেকের এর আগেও হতে পারে।তবে এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যদি মাসিক না হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
Mm kit খাওয়ার পর মাসিক না হলে করণীয়?
এম এম কিট খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে অনেক সময় ১৫ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত মাসিক বন্ধ হয়ে থাকে। তাই এক্ষেত্রে mm কিট খাওয়ার ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে অবশ্যই টেস্ট করে নিতে হবে যে আপনার গর্ভপাত হয়েছে কিনা।
যদি দেখেন যে গর্ভপাত হয়ে গিয়েছে তাও মাসিক হচ্ছে না তাহলে বুঝে নিতে হবে যে এই ওষুধের সাইড ইফেক্ট এর কারণে আপনার মাসিক বন্ধ হয়ে রয়েছে। তবে আপনার মাসিক যদি না হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
mm kit price in bangladesh | mm কিট দাম
অনেকে ইন্টারনেটে এম এম কি ট্যাবলেট এর দাম কত বা কোথায় পাওয়া যায় এই নিয়ে সার্চ করে থাকেন। তাদের সুবিধার জন্য আজকে এম এম ট্যাবলেটের দাম সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
এম এম কি ট্যাবলেটের প্যাকেটে সাধারণত ৫ টি ট্যাবলেট থাকে। এর মধ্যে একটি ট্যাবলেট থাকে বড় এবং চারটি ট্যাবলেট থাকে ছোট। এক প্যাকেট এম কি ট্যাবলেট এর দাম সাধারণত ৩০০ টাকা নেওয়া হয়ে থাকে।
শেষ কথা, আশা করি আজকের পোস্টটি যারা পড়েছেন তারা mm kit খাওয়ার নিয়ম বা কিভাবে এম এম কিট ট্যাবলেট খেলে কোন ধরনের ক্ষতি হয় না বা এই সম্পর্কিত আরো অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
তারপরেও যদি এই বিষয়ে কোনো ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।