গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার ওষুধের নাম | গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার উপায়

ঘাম ও ইনফেকশনের কারণে গোপনাঙ্গে চুলকানি হয় যা আমরা সবাই জানি। সাধারণত চুলকানি শরীরের যেকোন জায়গায় হতে পারে। আমার মনে হয় প্রাইভেট এরিয়াতে চুলকানি সবচেয়ে কষ্টদায়ক এবং বিব্রতকর।

বুঝতেই তো পারছেন কি? আমি গোপনাঙ্গের চুলকানির কথা বলতেছি। গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করতে ঘরোয়া উপায় প্রয়োগে ভাল ফলাফল পাওয়া যেতে পারে। মানুষের গোপনাঙ্গে চুলকানি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার ওষুধের নামএটি শুষ্কতার কারণে হতে পারে, আবার অন্য কোন রাসায়নিক বস্তুর ক্রিয়াকলাপের কারণে হতে পারে। যেমনঃ সাবানের ব্যবহার। আবার গোপনাঙ্গে চুলকানি ছত্রাকের সংক্রমণ, ব্যাকটেরিয়া ভ্যাজিনোসিস ও এসটিআই এর কারণেও হতে পারে।

আজকের আর্টিকেলে গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার ওষুধের নাম, গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার উপায়, গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

গোপনাঙ্গের চুলকানি হওয়ার কারণ?

গোপনাঙ্গে চুলকানি হওয়া এটি মানুষের জন্য নতুন কোন কিছু নয়। বহু আগে থেকে এই রোগ ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের শরীরে সংক্রমণ করে থাকে। গোপনাঙ্গে চুলকানি হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে।

ছেলে এবং মেয়েদের গোপনাঙ্গের চুলকানি হওয়ার কারণগুলো পৃথক পৃথক। গোপনাঙ্গে চুলকানি হওয়ার বৈজ্ঞানিক কিছু কারণ রয়েছে। যেমনঃ

  • ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের কারণে
  • ছত্রাকের আক্রমণের কারণে এবং
  • ট্রাইকোমোনিয়াসিস প্যারাসাইটের আক্রমণের কারণে।

এছাড়াও আপনার যৌনাঙ্গে যদি উকুন, খোশ পাঁচরা কিংবা মাইকোপ্লাজমা জেনেটালিয়াম এর সংক্রমণ হয় তাহলে আপনার যৌনাঙ্গের চুলকানি হতে পারে।

ছেলেদের গোপনাঙ্গে কেন চুলকানি হয়?

ছেলেরা যখন গোসল করবে তখন সম্পূর্ণ শরীর ভালভাবে পরিষ্কার করবেন। গোপনাঙ্গের আশেপাশে যদি ভালভাবে পরিষ্কার করা না হয়, তাহলে ছেলেদের  চুলকানি হতে পারে।

এছাড়াও ছেলেদের পরিহিত অন্তর্বাস বা শর্ট প্যান্ট কিংবা আন্ডারওয়্যার নিয়মিত পরিষ্কার না করলে গোপনাঙ্গে চুলকানি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। এছাড়াও আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি ছত্রাকজনিত কারণে ছেলেদের গোপনাঙ্গ চুলকানি হয়ে থাকে।

মেয়েদের গোপনাঙ্গে চুলকানি কেন হয়?

মেয়েদের যৌনা*ঙ্গে নানান কারণে চুলকানি হতে পারে। এসব কারণের মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হল মাসিকের সময় অস্বাস্থ্যকর প্যাড ও কাপড় পরিধান করা।

ডায়াবেটিস, রেনাল ডিজিজ, একজিমা ও রক্তে কোন রোগ থাকলে কিংবা অন্যান্য কোন রোগ থাকলে মেয়েদের গোপনাঙ্গে চুলকানি হতে পারে। অনেক সময় খেয়াল করলে দেখা যায় যে মেয়ে যৌনকর্মীদের গোপনাঙ্গে চুলকানি অনেক বেশি হয়ে থাকে।

কারণ হল এরা অবাধ যৌন আচরণ করে থাকে। মেয়েদের গোপনাঙ্গ যদি সব সময় খুব গরম ও আদ্র থাকে, তাহলে চুলকানি হতে পারে। এগুলো ছাড়াও মেয়েদের যৌনাঙ্গে চুলকানি হওয়ার আরো অনেক কারণ থাকতে পারে।

গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার ওষুধের নাম?

  • Afun Cream (এফান ক্রিম)
  • ফানজিডাল এইচ সি ক্রিম
  • Flugal 50 (ফ্লুগাল ৫০ ক্যাপসুল)
  • বিলানেক্স ২০ ক্রিম
  • বেটামেসন (Betameson) সিএল ক্রিম

বিশেষ সতর্কীকরণ

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত ঔষুধ সেবন করা একদমই উচিত নয়। চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত উক্ত ঔষুধ সেবন করে কোন ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হলে বা কোন ক্ষতি হলে আমরা দায়ী থাকবো না।

গোপনাঙ্গে চুলকানি হলে করণীয়?

  • গোপনাঙ্গ এবং গোপনাঙ্গের আশেপাশে সব সময় পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করতে হবে।
  • নিয়মিত গোসল করতে হবে এবং গোসল করার পর ভেজা কাপড়ে বেশিক্ষণ না থাকাই ভাল।
  • বেশিক্ষণ থাকলে ছত্রাক হওয়ার সম্ভাবনা বেরে যায়।
  • যৌন মিলনের পর প্রসাব করুন ও যৌনাঙ্গ ভালভাবে পরিষ্কার করে নিন।
  • ডায়াবেটিস থাকলে ভাল চিকিৎসা নিন।
  • স্বপ্নদোষ কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তমৈথুন হলে গোপনাঙ্গটি ভালভাবে পরিষ্কার করে নিন।
  • সব সময় সুতি কাপড়ের তৈরি আন্ডার ওয়্যার পরিধান করার চেষ্টা করুন।

গোপনাঙ্গের চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়?

কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো অনুসরণ করে গোপনাঙ্গে চুলকানি উপশম করা যায়। যেমনঃ

বেকিং সোডা দিয়ে গোসল

ত্বকে ছত্রাক সংক্রমণের কারণে চুলকানি হলে ও তার পাশাপাশি আরও কিছু চুলকানির ক্ষেত্রে বেকিং সোডা অত্যন্ত কার্যকরী। ২০১৩ সালের একটি গবেষণায় প্রমাণিত হয় যে বেকিং সোডায় অ্যান্টিফাঙ্গাল গুনাবলি আছে।

এর পরবর্তী বছর অর্থাৎ ২০১৪ সালের অপর একটি গবেষণার দেখা যায় যে, বেকিং সোডা ক্যান্ডিডা কোষকে মেরে ফেলে থাকে।

একথা স্পষ্ট যে, বেকিং ছত্রাক সংক্রমণ ঠেকাতে খুবই কার্যকরী ভুমিকা রাখে। ১/৪ থেকে ২ কাপ বেকিং সোডা এক বালতি পানিতে কুঁড়ি মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। এই পানি দিয়ে লম্বা সময় নিয়ে গোসল করতে হবে।

সুতি আন্ডারওয়্যার পরিধান

বায়ু চলাচল করে এমন স্থানে ছত্রাক দ্রুত বৃদ্ধি এবং বিস্তার ঘটাতে পারে না। অন্যান্য কাপড়ের আন্ডারওয়্যার থেকে সুতি কাপড়ের আন্ডারওয়্যার খুব বেশি আরামদায়ক হয়।

আর তাই আমাদের উচিৎ সুতি আন্ডারওয়্যার পরিধান করা। এতে করে ছত্রাকের সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব হবে।

কর্টিসোন ক্রিম

নাভির নিচের চুল কাটার পর অনেক সময় চুলকানি হতে পারে। এক্ষেত্রে কর্টিসোন ক্রিম ভাল কাজ করবে। তাছাড়া এটি একজিমা, ত্বকের এলার্জি এবং কিছু ফুসকুড়িতে ভাল কাজ করে। কিন্তু, এই ক্রিমটি কখনো গোপনাঙ্গের ভিতরে ব্যবহার করা যাবে না।

নারিকেল তেল

২০১৬ সালের একটি গবেষণায় প্রমানিত হয় যে নারিকেল তেল ক্যান্ডিডা অ্যালবিক্যান্স এর বিরুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান। তাই ছত্রাকের সংক্রমণ রোধে শরীর এবং গোপনাঙ্গে নারিকেল তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।

গোপনাঙ্গে ক্যান্ডিডা অ্যালবিক্যান্স এর বিস্তার রোধ করতে পারলে চুলকানি প্রতিরোধ করা অনেকাংশেই সম্ভবপর হয়।

প্রোবায়োটিক এর ব্যবহার

প্রোবায়োটিক গোপনাঙ্গের অভ্যন্তরে উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে খুবই সাহায্য করে। এধরণের প্রোবায়োটিক ক্যাপসুল আকারে বিভিন্ন ওষুধের দোকানে পাওয়া যায়। তাই আপনার পাশের ওষুধের দোকানে খোঁজ নিয়ে আপনি দেখতে পারেন।

প্রোবায়োটিক খাবার

প্রোবায়োটিক খাবারগুলো আমাদের অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। পাশাপাশি গোপনাঙ্গের স্বাস্থ্যের জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রোবায়োটিক খাবারগুলো আমাদের অন্ত্রের এবং গোপনাঙ্গের উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোর বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। বিভিন্ন ধরনের প্রোবায়োটিক খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে যেমনঃ কম্বুচা, দই, কিচমিচ ইত্যাদি।

সাবধনতা

ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ধরনের ওষুধ সেবন করা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।

Sharing Is Caring:

This website mainly provides information on exercise, fitness, wellness, healthy living, etc. in the Bengali language.

Leave a Comment