শিশুদের হাম হলে, রোগীর শরীরে অল্প হলেও পুষ্টির অভাব এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই, সঠিক খাদ্য গ্রহণ ও পুষ্টি জোগানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।সঠিক খাবার এবং যত্নের মাধ্যমে শিশুর রোগমুক্তি প্রক্রিয়া দ্রুততর করা সম্ভব। এ সময় খাবারের মধ্যে ভিটামিন, প্রোটিন, এবং অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান অন্তর্ভুক্ত করা দরকার, যাতে শিশুর শরীরের শক্তি বাড়ে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়।
এছাড়া, পানির অভাব দূর করতে এবং শরীরের হাইড্রেশন বজায় রাখতে তরল খাবারও অত্যন্ত প্রয়োজন। এতে করে শিশুর সুস্থতা আরও দ্রুত প্রাপ্ত হতে পারে এবং হাম এর প্রভাবও কমিয়ে আনা সম্ভব হয়।
শিশুদের হাম কি?
শিশুদের হাম একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা সাধারণত উচ্চ জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি, চোখে লালভাব, এবং শরীরে চকচকে রূপালি রেশমি দানা বা ফুটে ওঠা র্যাশের মাধ্যমে চিহ্নিত হয়।
হাম সেরে উঠতে কিছু নির্দিষ্ট খাবার এবং যত্ন প্রয়োজন, যা শিশুকে দ্রুত সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করতে পারে।
শিশুদের হাম হলে কি খেতে হবে?
হাম একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা সাধারণত শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। হাম হলে শিশুর শরীরে জ্বর, র্যাশ, কাশি, সর্দি এবং চোখ লাল হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়।
এই সময়ে শিশুর পুষ্টিকর খাবার দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে। হাম হলে শিশুদের কী খাওয়ানো উচিত তা নিচে দেওয়া হল:
১. তরল খাবার
পানি
হাম হলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে, তাই শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করানো উচিত।
ফলের রস
তাজা ফলের রস (যেমন কমলার রস, আপেলের রস) ভিটামিন সি সরবরাহ করে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
স্যুপ
হালকা মুরগির স্যুপ বা সবজির স্যুপ শরীরে শক্তি জোগায় এবং পুষ্টি সরবরাহ করে।
২. ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার
হামের সময় ভিটামিন এ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি চোখের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গাজর, মিষ্টি আলু, কুমড়ো, পালং শাক, ডিম এবং দুধ ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার।
৩. পুষ্টিকর ও হালকা খাবার
দলিয়া
হালকা ও সহজে হজমযোগ্য খাবার যেমন দলিয়া বা ওটমিল শিশুদের জন্য উপযুক্ত।
সিদ্ধ আলু বা মাছ
হালকা করে সিদ্ধ করা আলু বা মাছ প্রোটিন ও শক্তি সরবরাহ করে।
ফল
কলা, আপেল, পেঁপে ইত্যাদি ফল হালকা এবং পুষ্টিকর।
৪. প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার
ডিম, মুরগির মাংস, মাছ এবং ডাল প্রোটিনের ভালো উৎস, যা শরীরের ক্ষয়পূরণে সাহায্য করে।
৫. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার
লেবু, আমলকী, কমলা, মাল্টা, টমেটো ইত্যাদি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৬. জ্বর কমাতে সাহায্য করে এমন খাবার
তুলসি পাতার চা
তুলসি পাতার চা জ্বর কমাতে এবং শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
আদা চা
আদা চা গলা ব্যথা এবং কাশি কমাতে সাহায্য করে।
৭. এড়িয়ে চলুন
তেলেভাজা ও মসলাদার খাবার
- এগুলো হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- কোল্ড ড্রিংকস বা প্রক্রিয়াজাত খাবার:
- এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
৮. বিশ্রাম ও যত্ন
- শিশুকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে দিন।
- চোখের যত্ন নিন, কারণ হামের সময় চোখ সংবেদনশীল হয়ে থাকে।
হাম সাধারণত ৭-১০ দিনের মধ্যে সেরে যায়, তবে যদি শিশুর অবস্থার উন্নতি না হয় বা জ্বর ও অন্যান্য লক্ষণ গুরুতর হয়, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।