দাঁত ব্যথা হলে করণীয় | দাঁত সাদা করার উপায়

সুস্থ সুন্দর হাসিকে ফুটিয়ে তুলতে সুস্থ দাঁতের অধিকারী হওয়া চাই। এই জন্য দাঁত ভাল রাখার উপায়ও জানতে হবে। কেননা দাঁত আমাদের মানবদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।দাঁত ব্যথা হলে করণীয়যদি আপনি প্রাণবন্ত স্নিগ্ধ হাসি মুখে ফুটিয়ে তুলতে চান, তাহলে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মত নিয়মিত দাঁতের যত্ন করতেই হবে। আর এর জন্য সঠিক ওরাল কেয়ার প্রোডাক্টের পাশাপাশি হেলদি লাইফস্টাইল কি-ফ্যাক্টর হিসেবেও কাজ করবে।

Table of Contents

১. দাঁত ভাল রাখার উপায়?

আমরা যেমন ত্বকের যত্নে বিভিন্ন টিপস অনুসরণ করি ঠিক তেমনিভাবে আপনি যদি আপনার দাঁতকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনার দাঁতের যত্ন নিতে হবে।

তবে উল্টা পাল্টা যত্ন করলে আপনার দাঁত ক্ষয় হওয়া শুরু করবে। তাই দাঁত ভাল রাখার উপায় হিসাবে আমরা অবশ্যই সঠিক নিয়মগুলোই আপনাদেরকে জানাবো।

দাঁতের জন্য কোন পেস্ট ভাল?

দাঁতের সুরক্ষায় যখন টুথপেস্টের কথা আসে তখন দাঁত সাদা করার চেয়েও টুথপেস্টে কি কি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আপনি যে ফ্লেভারের অথবা যে ব্রান্ডের টুথপেস্ট সিলেক্ট করুন না কেন? আপনাকে এমন কোন টুথপেস্ট সিলেক্ট করতে হবে যে টুথপেস্টে ফ্লোরাইড এর উপস্থিতি বেশ ভাল থাকে।

দাঁত শক্ত ও ক্ষয় রোধ করার টুথপেস্ট?

আপনি যদি দাঁত শক্ত করতে চান এবং ক্ষয় রোধ করতে চান। সেক্ষেত্রে যেই টুথপেস্টে ফ্লোরাইড ১,০০০ পিপিএম থাকে সেগুলো ব্যবহার করবেন। ফ্লোরাইড দাঁতকে শক্ত করে এবং ক্ষয় রোধ করে থাকে।

যদি আপনি দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে চান তাহলে ভুলেও দাঁত সাদা করার টুথপেস্ট ব্যবহার করবেন না। আমরা জানি ফ্লোরাইড দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধের পাশাপাশি  জীবাণুর সাথে লড়াই আর আমাদের দাঁতের জন্য একটি সুরক্ষামূলক প্রটেকশান হিসেবে কাজ করে থাকে।

দাঁতের দাগ দূর করার টুথপেস্ট?

দাগ দূর করতে অ্যাবরেসিভ আছে যে টুথপেস্টে সেসব টুথপেস্ট ব্যবহার করবেন। কেননা অ্যাবরেসিভ দাঁতের দাগ দূর করে থাকে।

তবে খেয়াল রাখবেন এটা বেশি পরিমাণ থাকলে দাঁতের ক্ষতি হতে পারে। এজন্যই বলা হয়ে থাকে যাদের দাঁত ক্ষয় হয়, তাদের এই টুথপেস্ট ব্যবহার করা উচিত নয়।

দাঁত শিরশির করার টুথপেস্ট?

দাঁত শিরশির করলে, যে টুথপেস্টে পটাশিয়াম নাইট্রেট, স্ট্রন্টিয়াম ক্লোরাইড এবং স্ট্যানাস ফ্লোরাইড রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করুন। এইসব উপাদান দাঁত শিরশির করার সমস্যা দূর করে থাকে।

২. ঠিকমতো ব্রাশ করা

দাঁত ব্রাশ করার সঠিক নিয়ম?

আপনার দাতঁকে সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত ব্রাশ করাটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক তেমনিভাবে দাঁত ব্রাশ করার সঠিক নিয়ম জানাটাও কিন্তু বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যদি আপনি সঠিক নিয়ম মেনে ব্রাশ না করেন।

তাহলে তা উপকার করার বদৌলতে উল্টো দাঁত এবং মাড়ির ক্ষতি করতে পারে। তাই প্রোপারলি ব্রাশ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে নরম ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। ধীরে ধীরে টাইম নিয়ে টুথ ব্রাশটি মুখের পুরো এরিয়া জুড়ে ঘুরাতে হবে।

plaque রিমুভ করার জন্য আপনাকে ধীরে ধীরে ব্রাশ করতে হবে। কারণ plaque যদি সঠিকভাবে রিমুভ করা না হয় তাহলে তা gingivitis এ রূপ নিয়ে দাঁতের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।

৩. জিহবাকে বাদ দিবেন না

Plaque আপনার জিহবাতে আক্রমণ করতে পারে। এমনকি এটি মুখে বাজে গন্ধসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যার দিকেও নিয়ে যেতে পারে।

তাই এই সমস্যা থেকে বাঁচতে চাইলে, আপনি যখনি ব্রাশ করবেন অবশ্যই আপনি সে সময় আপনার জিহ্বাকে পরিস্কার করার চেষ্টা করবেন। জিহ্বাতেও একটু হালকা করে ব্রাশ করবেন।

৪. নিয়মিত ব্রাশ করা

আপনি যদি দাঁতের সেফটি নিশ্চিত করতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করতে হবে। আপনি যত বড়োই ব্যাস্ত থাকুন না কেন, দিনে দুইবার অর্থাৎ সকালে ঘুম থেকে উঠে খাওয়ার পরে এবং রাতে ঘুমানোর আগে আপনাকে দাঁত ব্রাশ করতেই হবে।

আমরা অনেকেই আছি এই বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেই না। এতে অনেকের দাঁতে প্রায়শই germs এবং plaque এর মত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাই ওরাল কেয়ারের পার্ট হিসেবে আপনি নিয়মিত ব্রাশ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

৫. ফ্লুসিংকে ব্রাশ করার মতো করে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিবেচনা করুন

যারা নিয়মিত ব্রাশ করেন এমন অনেকেই ফ্লুসিংকে অবহেলা করেন। দাঁত বিশেষজ্ঞ জোনাথন শোয়ার্টজ জানান যে, ডিডিএস ফ্ল্যাশিং শুধুমাত্র আপনার দাঁতের মধ্যে আটকে থাকা খাবার বা ব্রকোলির সামান্য টুকরা বের করে এমনটা নয়।

বরং ইহা দাঁতের মাড়িকে শক্ত করার পাশাপাশি দাঁতকে সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করে। তাই সাপ্তাহে একবার হলেও ফ্ল্যাশ করা অভ্যাস গড়ে তুলুন।

ফ্লুসিং কি?

ফ্লুসিং হচ্ছে সুতা দিয়ে দাঁতের কোন থেকে লেগে থাকা খাবার বের করা। এটি সত্য যে ফ্ল্যাশিং অনেকের কাছে কঠিন হতে পারে, বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের এবং যারা আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত তাদের জন্য।

তাই হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না এমন কিছু উপাদান নির্বাচন করতে হবে যা আপনার দাঁতকে ফ্ল্যাশ করতে সাহায্য করতে পারে। মেডিসিনের দোকান থেকে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত ডেন্টাল ফ্যাশ আপনি ব্যবহার করতে পারেন।

৬. মাউথওয়াশ করুন

বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরণের বিজ্ঞাপনে দাঁত ভাল রাখার উপায় হিসেবে মাউথওয়াশের প্রয়োজনীয়তা দেখায়। কিন্তু অনেকেই এর ব্যবহারবিধি ও উপকারিতা না জানার কারণে তা এড়িয়ে যায়।

দাঁত বিশেষজ্ঞ শোয়ার্টজ বলেছেন, মাউথওয়াশের ৩টি উপকারিতা?

  • মাড়ির আশেপাশে যেসব স্থানে ব্রাশ করা যায় না তা পরিষ্কার করে।
  • এটি মুখের মধ্যে অ্যাসিডের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
  • দাঁতকে পুনরায় সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করে।

দাঁতের মাড়ি ভাল রাখার উপায়?

মাউথওয়াশ দাঁতের ভারসাম্য আনতে সাহায্য করার জন্য একটি হ্যাল্পিং টুল হিসেবে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে।

তিনি ব্যাখ্যা করেন এভাবে, আমি মনে করি শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে যারা ব্রাশ এবং ফ্ল্যাশ করার বিকল্প খুঁজছেন তাদের জন্য দাঁত ভাল রাখার উপায় হিসাবে মাউথওয়াশ সঠিক সমাধান।

৭. বেশি করে পানি পান করুন

আপনার শারীরিক সুস্থতার জন্য পানি যেমন উত্তম, ঠিক তেমনিভাবে দাঁতের সুরক্ষার জন্যও পানি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। পানি ব্রাশের মধ্যে আঠালো এবং অ্যাসিডিক খাবার থেকে শরীরের জন্য ক্ষতিকর উপাদান ধুয়ে ফেলতে সাহায্য করে।

৮. সতেজ ফল এবং সবজি খান

আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে জাঙ্ক ফুড, ক্যান ফুড, প্রক্রিয়াজাত বা রাস্তার অস্বাস্থ্যকর খাবার মজাদার হলেও এটি আপনার দাঁতের জন্য খুবই মারাত্মক ক্ষতিকর। সুতরাং অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়ানোর চেষ্টা করুন।

এর পাশাপাশি আপনি আপনার চিবানোর ক্ষমতা বৃদ্ধি করুণ। আর ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার বেশি বেশি খেতে পারেন। দাঁত ভাল রাখার খাবার যেমনঃ

  • সবুজ শাক
  • গাজর
  • কমলালেবু
  • লেবু
  • স্ট্রবেরি
  • মধু
  • আপেল
  • চিজ
  • কাঁচাপেঁয়াজ
  • দুধ
  • কমলা
  • আমন্ড
  • বাদাম
  • রসুন ইত্যাদি।

৯. চিনিযুক্ত ও অম্লযুক্ত খাবার খাওয়া যাবে না

চিনি মূলত মুখের মধ্যে অ্যাসিডে রূপান্তরিত হয়। যা আপনার দাঁতের এনামেলকে সহজে ক্ষয় করতে পারে। সাধারণত এই অ্যাসিড গহ্বরের দিকে পরিচালিত করে। অ্যাসিডিক ফল চা কিংবা কফিও দাঁতের এনামেল নষ্ট করতে পারে।

যদিও আপনাকে এ ধরণের খাবারগুলো পুরোপুরি এড়াতে হবে না। তবে আপনার দাঁত ভাল রাখার উপায় হিসাবে আপনি চাইলে তা সীমিত আকারে খেতে পারেন।

১০. বছরে অন্তত দুইবার দাঁতের ডাক্তার দেখান

আপনার দাঁতকে সুস্থ রাখতে এবং প্রয়োজনীয় সমস্যা সমাধান করারা ক্ষেত্রে অবশ্যই নিয়মিত ডেন্টিস্ট দেখাতে হবে। ন্যূনতম বছরে দুবার চেকআপের জন্য আপনার দাঁতের জন্য আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

কোন ভিটামিনের অভাবে দাঁত ক্ষয় হয়?

কোন ভিটামিনের অভাবে দাঁত ক্ষয় হয় তা হল ভিটামিন ডি।

দাঁতের মাড়ি ভাল রাখার উপায় কি?

উপরে যে খাবারগুলো বললাম, সেই খাবারগুলো খাবেন। চকলেট কিংবা দাঁতের সাথে লেগে থাকে এমন খাবার খাওয়ার পর কুলি করে দাঁত পরিষ্কার করে নিবেন।

দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত বন্ধ করার উপায় কি?

প্রথমে হলুদের গুঁড়া নিন এক চামচ এবং আধা চা চামচ সরিষার তেল। এবার এটার সঙ্গে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে নিন। এরপর এটাকে মাড়ির গোঁড়ায় হালকা করে ঘষতে থাকুন। এছাড়াও লবঙ্গ চিবিয়ে মাড়িতে লাগিয়ে রাখতে পারেন।

Sharing Is Caring:

This website mainly provides information on exercise, fitness, wellness, healthy living, etc. in the Bengali language.

Leave a Comment