আক্কেল দাঁত ওঠার সময় অনেকেরই কমবেশি ব্যথা হয়ে থাকে। ব্যথার যন্ত্রণা অনেকের এমন বেশি হয়ে থাকে যার কারণে ব্যথা নাশক ওষুধও খাওয়া লাগে।তাছাড়া আক্কেল দাঁতের ব্যথা দূর করার জন্য অনেকেই ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন কিন্তু সমস্যার সমাধান হয় না।
আজকের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে জানতে পারবেন আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ
আক্কেল দাঁতের ব্যথায় করণীয়?
আক্কেল দাঁত উঠলে ব্যথা কিভাবে নিরাময় করবেন বা আক্কেল দাঁতের ব্যথায় করণীয় কি এ নিয়ে অনেকের সঠিক জ্ঞান নেই। আক্কেল দাঁতের ব্যথা যখন শুরু হয়ে থাকে তখন ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে অনেকটা আক্কেল দাঁতের ব্যথা দূর করা যায়।
তবে অবস্থা খুবই গুরুতর হলে সরাসরি ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা পদ্ধতিতে অর্থাৎ ঔষধের মাধ্যমে এর সমাধান করা উচিত।
আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায?
আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানোর জন্য ঘরোয়া উপায় গুলো বেশ কার্যকরী। উক্ত উপায় গুলো যদি সঠিকভাবে মানা যায়। তাহলে আক্কেল দাঁতের ব্যথাকে অনেকটা কমানো সম্ভব।
ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন
আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানোর জন্য ভিনেগার দারুন কাজ করে থাকে। ঘরে যদি ভিনেগার থেকে থাকে তাহলে এক চামচ ভিনেগারের সঙ্গে সমপরিমান পানি মিশিয়ে নিতে হবে।
তুলাই করে ভিনেগার মিশিয়ে আক্কেল মাড়ির স্থানে হাত দিয়ে চেপে ধরে রাখতে হবে। দেখবেন ধীরে ধীরে ব্যথা কমে যাচ্ছে। যতক্ষণ পর্যন্ত ব্যথা কমতে শুরু না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত পদ্ধতিটি অবলম্বন করতে হবে।
লবঙ্গ দিয়ে আক্কেল মাড়ির ব্যথা কমানোর উপায়
লবঙ্গ হচ্ছে খুবই অসাধারণ একটি ঔষধি। কমবেশি সবারই ঘরে লবঙ্গ রয়েছে। আক্কেল মাড়ির ব্যথা কমানোর জন্য একটি লবঙ্গ নিতে হবে।
এবং মুখের ভেতর দিয়ে দাত দিয়ে চেপে ধরে রাখতে হবে। কিন্তু কখনোই চিবিয়ে ফেলবেন না। কিছুক্ষণের মধ্যে দেখবেন ব্যথা অনেক কমে গিয়েছে।
পেঁয়াজ ব্যবহার করতে পারেন
পেঁয়াজ আক্কেল দাঁতের ব্যথা দূর করার জন্য অসাধারণ কাজ করে থাকে। প্রথমে এক টুকরো পেঁয়াজ নিতে হবে এবং দাঁত দিয়ে আক্কেল মাড়ির যে স্থানে ব্যথা সেখানে চেপে ধরতে হবে।
দেখবেন ধীরে ধীরে আক্কেল মাড়ির ব্যথা অনেক কমে যাচ্ছে। কেননা পেঁয়াজের রসে রয়েছে অসাধারণ এক গুণ যা ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
বেকিং সোডা ব্যবহার করা যেতে পারে
যেকোনো ব্যথা কমাতে বেকিং সোডা দারুন কাজ করে থাকে। প্রথমে একটি তুলার বল নিতে হবে এবং পানিতে ভিজিয়ে নিতে হবে।
তারপর এর সাথে বেকিং সোডা লাগিয়ে দিতে হবে। তারপরে এই তোলা আক্কেল দাঁতের উপরে রাখতে হবে। দেখবেন ধীরে ধীরে ব্যথা অনেক কমে যাচ্ছে।
পেয়ারার পাতা দিয়ে আক্কেল মাড়ির ব্যথা কমানোর উপায়
প্রথমে কিছু পেয়ারা গাছের কচি পাতা নিতে হবে এবং এগুলো সুন্দরভাবে সেদ্ধ করে নিতে হবে।এবার ওই পাতা আক্কেল দাঁতের উপর ভালোভাবে কিছুক্ষণ রাখতে হবে।
তাহলে দেখবেন অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই ব্যথা অনেকটা কমে গিয়েছে। আক্কেল মাড়ির ব্যথা দূর করার জন্য এই উপায়টি খুবই কার্যকরী।
লবণ মিশিয়ে গার্গল ও কুলকুচি করতে পারেন
আক্কেল মাড়ির দাঁত না উঠলেও দাঁতের নিচে সংক্রমণ হলে অনেক ক্ষেত্রে ব্যথার সৃষ্টি হয়ে থাকে। সেই ক্ষেত্রে হালকা গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করা যেতে পারে।
এই পদ্ধতিতে মুখের ভিতরে যেকোনো ব্যথা নিমিষেই অনেকটা কমে যাবে। কেননা লবণ পানি এই ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে থাকে।
আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানোর ঔষধ?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করে আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানো যায়। কিন্তু যাদের আক্কেল দাঁত ওঠার জায়গা পায় না তাদের ক্ষেত্রে অবস্থাটা আরো আশঙ্কজনক হয়ে থাকে।
তাই যারা ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে আক্কেল দাঁতের ব্যথা দূর করতে পারছেন না তারা চাইলে সরাসরি একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পারেন এবং তার কাছ থেকে ডাক্তারি চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন।
আক্কেল দাঁতের ব্যথা কতদিন থাকে?
আক্কেল দাঁতের ব্যথা খুবই যন্ত্রণাদায়ক হয়ে থাকে। বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীদের এই সমস্যাটা বেশি হয়ে থাকে। যাদের মুখে ৩২টি দাঁতের জায়গা থাকে না তাদের আক্কেল দাঁত ওঠার সময় প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয়।
কেননা এই সময়ে আক্কেল দাঁত বের হওয়ার জন্য সঠিক জায়গা থাকে না। এর ফলে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায় ও তীব্র ব্যথা অনুভব হয়। তাছাড়া এতো পরিমানে মাড়ি ফুলে থাকে যা মুখের বাইরে থেকেও বোঝা যায়।আক্কেল দাঁতের ব্যথা সাধারণত কয়েকদিন পর্যন্ত থেকে থাকে।
আক্কেল দাঁত কত বছর বয়সে হয়?
আক্কেল দাঁত সাধারণত ১৭ থেকে ২৫ বছরের বয়সে হয়ে থাকে। আবার এমন অনেকটা দেখা গিয়েছে কারো কারো ৩০ অথবা ৪০ বছরের পরেও আক্কেল দাঁত গজায়। আক্কেল দাঁতের ব্যথা যখন শুরু হয় তখন এটা অনেকদিন ধরেই থাকে।
শেষ কথা, আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায় বা কিভাবে খুব সহজে ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
আশা করি আজকের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে এই বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন। তারপরেও যদি কোন বিষয় সম্পর্কে কোন ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে সরাসরি কমেন্ট করতে পারেন। ধন্যবাদ।